top of page

চিত্তরঞ্জন ঘোষ

chitta ghosh.jpg

লেখক পরিচিতি লেখার শেষে দেওয়া আছে

* ।। *নতুন করে পাবো বলে*।।

 

       *কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা*

 

 *প্রাক-কথন* :- 

 "আমাদের গেছে যে দিন সবকিছুই কি গেছে? কিছুই কি নেই বাকী?"  কিছু কিছু স্মৃতি তো বেঁচে থাকে।। তারা আমাদের কখনও হাসায় কখনও বা কাঁদায়।। আমার কানুনগো জীবনে প্রবেশের পূর্বেও আমার একটা কর্মজীবন ছিল।। সংসারের খুব কঠিন সময়ে করুণাধারার মতো আমি গ্রামসেবক হিসাবে প্রশিক্ষণের নিয়োগপত্র পাই।। প্রশিক্ষণ কেন্দ্র- তদানীন্তন পশ্চিম দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট (মাহীনগর)।। দু বছরের প্রশিক্ষণ।। তারপর তৃতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকরি।। সময়টা ছিল ১৯৭১ সাল।। অধুনা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের উত্তাপ সীমান্তের এপার থেকে অনুভব করা যাচ্ছিল।।  সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ আমরা বুঝতে পারি বড় কিছু একটা ঘটতে চলেছে।। কারন আমাদের প্রশিক্ষন কেন্দ্রের সন্নিকটেই ছিল একটি পরিত্যক্ত বিমানবন্দর।। ঐ সময়েই সেটি রনসাজে সেজে উঠতে লাগলো।। স্থলযুদ্ধের সবরকম উপক‍রণ যেমন ট্যাঙ্ক, কামান এবং আরও অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র সেখানে মজুত করা হচ্ছিল।। বিমানবন্দর থেকে প্রধান সড়কে আসতে গেলে আমাদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের হোষ্টেল বিল্ডিং এর পিছনে দশ মিটার দূ্রবর্তী রাস্তা দিয়েই আসতে হ'ত।। তাই গভীর রাতে যানবাহনের চলাচল আমরা দেখতে পেতাম।। সেপ্টেম্বর মাস থেকেই রাস্তায় সেনাবাহিনীর ট্রাকের চলাচল বেড়ে যায়।। বিভিন্ন সূত্রে তখন জানতে পারি ভারতীয় সেনাবাহিনীর জওয়ানেরা ছদ্মবেশে বাংলাদেশে ঢুকে খানসেনাদের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করছেন।। সম্ভবত ডিসেম্বর মাসের তিন তারিখে পশ্চিম সীমান্তে পাকিস্তান ভারত আক্রমণ করে।। শুরু হয়ে গেল সরাসরি ভারত - পাকিস্তান যুদ্ধ।। জেলা প্রশাসনের নির্দেশে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আমাদের রাত কাটে ট্রেঞ্চে শুয়ে নিরাপত্তার স্বার্থে।। এর মধ্যেই একদিন খানসেনাদের ছোঁড়া কামানের গোলা আমাদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অভ্যন্তরে ট্রাক্টর ড্রাইভারের কোয়ার্টারে এসে পড়ে।।  তিনি নিহত হন ।। ফলে আমরা সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি।। পরদিনই প্রিন্সিপাল মহাশয় অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি ঘোষণা করেন এবং আমাদের মালদহ স্টেশনে পৌঁছে দেন।। কয়েকমাসের মধ্যেই আমরা অসম্পূর্ণ প্রশিক্ষণেই নিয়োগপত্র পেয়ে যাই এবং চাকরিতে যোগদান করি।। ইতিমধ্যেই খানসেনারা ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে।। ফলে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়।।  পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আমাদের আবার ডেকে পাঠানো হয়।। আমরা পুনরায় বালুরঘাটে যাই।। পরীক্ষা শেষ হয়।। যুদ্ধ শেষ হওয়ার কারণে তখন সীমান্ত দিয়ে অবাধ যাতায়াত।। কোন নিষেধাজ্ঞা তখনও আরোপিত হয়নি।। ঐ সময়েই আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে হিলি স্টেশন দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করি।। ভীষন উত্তেজনা অনুভব করি।। মেদিনীপুরের মানুষ হয়ে বাংলাদেশ ( পূর্ব পাকিস্তান) আমাদের কাছে এক অচেনা দেশ।। অবিভক্ত বাংলার কাহিনী পড়েছি।। চাক্ষুষ তো করিনি।। আমরা হিলি স্টেশন অতিক্রম করে দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন এলাকা রিকশা চড়ে সারাদিন ঘুরে বেড়ালাম, স্থানীয় মানুষজনের সাথে কথা বললাম।। সহৃদয় আপ্যায়ন পেয়েছি।।  সন্ধ্যের পর ফিরে এলাম বালুরঘাটে এবং তার পরদিনই কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা।। কর্মস্থল ছিল গড়বেতা-২ নং ব্লক,গোয়ালতোড়ে ।। ব্লক অফিসের কনিষ্ঠতম সদস্য হওয়ার সুবাদে সকলের ভালবাসা পেয়েছি।। বিডিও সাহেব, শ্রী প্রফুল্ল রঞ্জন দাস মহাশয়ের পৌনপুনিক চাপে নানান পরীক্ষায় বসতে হয়েছিল।। 

 

 *কানুনগো হিসাবে কর্মজীবন :* অবশেষে ১৯৭৭ সালের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এই চাকরিতে যোগ দিই ১৯৭৯ সালের ১৪ই সেপ্টেম্বর পুরুলিয়া সেটেলমেন্ট অফিসে (RSO)।। আলাপ হয় সিনিয়র দাদা শ্রী বিলাস ভান্ডারী ও শ্রী দীপক সরকার মহাশয়দের সাথে।। যাঁদের কাছে অনেক সাহায্য ও সহযোগিতা পেয়েছি।। পোষ্টিং হ'ল বান্দোয়ান সেন্ট্রালাইড ক্যাম্প।। সেখানে পৌঁছে পেয়েছিলাম সিনিয়র দাদা অজিত মন্ডলকে এবং ৭৮ ব্যাচের অজয় নারায়ন চক্রবর্তীকে।। অজিতদা মাসখানেকের মধ্যেই বদলী হয়ে গেলেন।। রইলাম আমরা দুজন।। শান্তিনিকেতনের ছাত্র হওয়ার সুবাদে অজয়বাবু কবিতা, গান প্রভৃতি বিষয়ে খুবই পারদর্শী ছিলেন।। এইসব নিয়েই কেটে যাচ্ছিল দিন।। ঐ সময় প্রনব দেও পুরুলিয়াতে ছিলেন।। আলাপ হয় ।। অত্যন্ত বন্ধুবৎসল।। সাহায্য ও সহযোগিতায় অকৃপণ।। একবছরের পরই বদলি হয়ে নিতুড়িয়া সেন্ট্রালাইসড ক্যাম্পে যাই যার অফিস ছিল রঘুনাথপুরে।। তারপর ১৯৮২ সালে মেদিনীপুর।। কয়েকটা হল্কা ক্যাম্প ঘুরি।। মাঠ খসড়া ও অ্যাটেস্টেশনের হাতে খড়ি এবং এল আর রেকর্ড প্রস্তুতির কাজ হাতে কলমে শিখি।। তারপর মেদিনীপুরের টাউন হল্কাতে পোষ্টিং।। সেখানে হাতে কলমে কিস্তোয়ার শিখি এবং কাজ করি ।। ১৯৮৮ সালে দিলীপ চৌধুরী সাহেবের রোষে বদলি শালবনী সেন্ট্রালাইসড ক্যাম্পে।। এখানে পোষ্টিং থাকা অবস্থায়ই দায়িত্ব পড়ে শালবনীতে New Note Press স্থাপনার জমি চিহ্নিতকরণের কাজ।। 

 

*শালবনী ARTI স্থাপনা ::* 

আপনাদের মধ্যে অনেকেই শালবনীর ARTIতে এসেছেন।। কিন্তু ভূমি সংস্কার দপ্তরের নিজস্ব গর্বের প্রতিষ্ঠানটি স্থাপনার প্রেক্ষাপট হয়তো অনেকেই জানেন না।। এটি স্থাপনের প্রথম থেকে অনেক কুশীলবদের মধ্যে আমি ও ছিলাম।। তাই এখনও যেটুকু মনে আছে সেইটুকুই বিবৃত করার চেষ্টা করছি।।

 

শালবনী বি এল আর ও অফিসের তত্ত্বাবধানে চলা প্রস্তাবিত টাকশালের জমি চিহ্নিত করণের কাজ চলাকালীন জেলা অফিস থেকে চিঠি পাঠানো হয় ১০০ একর বা তার বেশি খাস জমি থাকলে তার স্কেচ ম্যাচ ও ১নং খতিয়ানের কপি জেলা অফিসে পাঠাতে হবে।। বি এল আর ও, শ্রী অসিত কুন্ডু মহাশয়কে বলা হয়েছিল - চিত্ত সদ্য সদ্য কিস্তোয়ার টেবিল থেকে উঠে গিয়েছে, এই দায়িত্ব যেন তাকেই দেওয়া হয়।। সেগুলো তৈরি করে যথাসময়ে উর্ধ্বতন অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।।

দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিক মহাশয়দের কাছ থেকে পরে জেনেছি যে এই জমি খোঁজাখুঁজির কারন ছিল- প্রতিবছর রাজ্যের জন্য নির্বাচিত IAS, IPS এবং WBCS (Exe.), WBPS, WBCS (Judicial) এঁদের জন্য Joint Survey and Settlement Training এর ব্যবস্থা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরকে করতে হয়।। দায়িত্বে থাকেন 

ডি এল আর এস।। দীর্ঘদিন ধরে এই ট্রেনিং হ'ত তদানীন্তন জলপাইগুড়ি জেলার আলিপুরদুয়ারে।। এই ট্রেনিংয়ের জন্য Guest Lecturer, Field Training Officer প্রায় সকলকেই পাঠাতে হ'ত কোলকাতা ও দক্ষিনবঙ্গের জেলাগুলি থেকে।। ট্রেনি অফিসারদের জরিপের প্রাথমিক পাঠ এবং দপ্তরের কাজের সংশ্লিষ্ট আইনকানুনের বিষয়গুলিও অবহিত করা হ'ত।। উচ্চপদস্থ আমলাগণ যাঁরা ট্রেনি অফিসারদের বিভিন্ন বিষয়ে লেকচার দিতে যেতেন তাঁরা বিমানে যেতেই পছন্দ করতেন।। আরও শুনেছি কোন কোন গেষ্ট লেকচারার ফুন্টশোলিং, দার্জিলিং ইত্যাদি স্থানে বেড়ানোর বায়না ও করতেন।। যার ঝক্কি সামলাতে হ'ত  কোর্স ডিরেক্টর সাহেবকে এবং সমস্ত আর্থিক দায় বহন করতে হ'ত ভূমি সংস্কার দপ্তরকেই।। ফলে দপ্তরের ব্যয় ক্রমাগত বেড়ে যাচ্ছিল।।  দক্ষিণ বঙ্গ থেকে সমস্ত ট্রেনার অফিসার দের বারবার দীর্ঘদিনের জন্য ছেড়ে দেওয়ার ফলে সেই সেই জেলার স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছিল।। এই সমস্ত কারনে কলকাতা থেকে সহজে যাতায়াত করা যাবে এইরকম একটা জায়গার খোঁজে বিভিন্ন জেলাকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল।।  দপ্তরের তদানীন্তন সেক্রেটারি এন কে রঘুপতি, অধিকর্তা কে এস রাজেন্দ্রকুমার, উপ অধিকর্তা (জরিপ) অমিয়চাঁদ দত্ত, সহকারী অধিকর্তা (জরিপ)চিত্তরঞ্জন দাশ এবং উপ  অধিকর্তা (এল আর) মুকুলকান্তি সরকার সকলে মিলে বিভিন্ন জেলা থেকে পাঠানো জায়গাগুলি পরিদর্শন করেন।। অবশেষে শালবনী বি এল আর ও সাহেবের পাঠানো চেংশোল মৌজার জায়গাটি সকলের পছন্দ হয় এবং নির্বাচিত হয়।। এই সমস্ত ঘটনার সময়কাল ১৯৯১ সাল।। সিদ্ধান্ত হয় ঐ বছরের Joint Survey and Settlement Training -1991 শালবনীতেই অনুষ্ঠিত হবে।। ইনফ্রাস্ট্রাকচার তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় মেদিনীপুরের তদানীন্তন জেলাশাসক মানবেন্দ্র নাথ রায় এবং ডি এল আর আর ও, দিলীপ চৌধুরী মহাশয়দের।। তাঁরা পদ্ধতিগত ভাবে টেন্ডার ডেকে প্রাথমিকভাবে একটি গোডাউন, ট্রেনি অফিসারদের জন্য চারটি ডর্মিটরি, এবং ট্রেনার অফিসার ও আমিন বাবুদের জন্য একটা বড় ডর্মিটরি এবং একটি ডাইনিং হল তৈরির জন্য কাজ শুরু করা হয় ।। আমার উপর আদেশ হয় শালবনী বি এল আর ও অফিসের কাজের সাথে ( in addition to normal duty) এই নির্মীয়মান ট্রেনিং সেন্টারের কাজ দেখাশোনা করার।। এই দুই জায়গার কাজের সমন্বয় রক্ষা করা খুব কঠিন হয়ে উঠছিল।। এটা অনুভব করে ডি এল আর ও, দিলীপ চৌধুরী সাহেব আমাকে পূর্ণ সময়ের জন্য ঐ ট্রেনিং সেন্টারেই পোষ্টিং করে একটা অফিস করার আদেশ দেন।। ইতিমধ্যে আলিপুরদুয়ার থেকে সমস্ত তাঁবু, তাঁবু টাঙানোর আনুষঙ্গিক জিনিষপত্র চেংশোলে চলে আসে।। আলিপুরদুয়ারে ট্রেনিং চলাকালীন যে কয়জন ক্যাজুয়াল কর্মী কাজ করতেন, তাদের ও এখানে আনানো হয়।। সেই তাঁবুরই একটা টাঙিয়ে অফিস চালু হ'ল।। অফিস চালানোর জন্য করনিক হিসাবে শালবনী থেকে দীপঙ্কর ব্যানার্জী, গড়বেতা থেকে সমীর ভৌমিককে আনানো হয়।। দিলীপ চৌধুরী সাহেব প্রায় প্রতিদিন সন্ধ্যার পর ওখানে আসতেন, কাজের অগ্রগতির পর্যালোচনা করতেন এবং ফেরার সময় আমাদের মেদিনীপুরে ফিরিয়ে আনতেন।। অধিকর্তার অফিস থেকে মুকুল সরকার সাহেব ও চিত্তরঞ্জন দাস সাহেব মাঝে মাঝে এসে অগ্রগতির পর্যালোচনা করে যেতেন।। ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে ট্রেনিং শুরুর প্রোগ্রাম এসে গেছে।। তাই দিনরাত এক করে কাজ চলছে।। আলিপুরদুয়ার থেকে আগত জগদীশের নেতৃত্বে তাঁবু টাঙানো শুরু হয়ে যায়।। প্রথমে     'গভর্নরের টেন্ট', ক্লাসরুমের টেন্ট, কোর্স ডিরেক্টরের টেন্ট ও অন্যান্য 'গেষ্ট লেকচারারদের' টেন্ট, লাইব্রেরীর টেন্ট এগুলো টাঙানো চলতে থাকে।। ইতিমধ্যে ডাইরেক্টর অফিস থেকে সূর্যদা (সূর্য কর্মকার)  বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় লিখিত অনেক বই পৌঁছে দিয়েছেন।। সবকিছুই আমি স্বাক্ষর করে রিসিভ করছি।। কিন্তু ক্যাম্প অফিসে কোথায় কি থাকছে তার সাথে তাল রাখা যাচ্ছে না।। এইসময় দুজন UTRO (দিব্যেন্দু ঘোষ ও শ্রীকান্ত সাহু)কে এখানে পোষ্টিং করা হয় আমাকে সহায়তা করার জন্য।। ট্রেনিং পিরিয়ডে খাওয়ানোর জন্য ক্যাটারারের ও টেন্ডার হয়ে গেছে।। ধীরে ধীরে রান্নার বাসনপত্র, অন্যান্য অনেক সামগ্রী জমা করতে হচ্ছে।। ট্রেনিংয়ের উদ্বোধন করবেন তদানীন্তন ভূমি ও ভূমি সংস্কার মন্ত্রী মাননীয় বিনয়কৃষ্ণ চৌধুরী।। ভূমি সংস্কার দপ্তরের সকল উচ্চপদস্থ আধিকারিক, ডাইরেক্টরেটের প্রায় সকল আধিকারিকের ও আসার কথা।। ইতিমধ্যে ট্রেনি অফিসারদের নামের তালিকা এবং ট্রেনার অফিসার ও‌ আমিনবাবুদের নামের তালিকা এসে গেছে।। চৌধুরী সাহেব স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে হাঁকডাক করে সকলকে ব্যতিব্যস্ত রেখেছেন।। ডাইরেক্টরেটের চিত্তরঞ্জন দাশ, ADS, মহাশয় কোর্স ডাইরেক্টর হিসেবে নিয়োজিত হয়েছেন।। সহকারী কোর্স ডিরেক্টর হয়েছিলেন মেদিনীপুর সদরের এস ডি এল আর ও, অরুন কুমার দাস।। দুই দিন আগেই কোর্স ডিরেক্টর চলে এসেছেন।। ট্রেনি ও ট্রেনার অফিসার, আমিনবাবুদের মধ্যে কে কোন টেবিলে থাকবেন (Group Division) , তা তিনি তৈরি করছেন।। ট্রেনার অফিসার হিসাবে প্রথমবার এসেছিলেন বর্ধমান থেকে বিশ্বনাথ পাল, স্বরাজ রাজা, উত্তরবঙ্গ থেকে অমিতাভ চট্টোপাধ্যায়, দিলীপ ভট্টাচার্য, মেদিনীপুরের হরেন্দ্রনাথ মাহাত সহ অনেকেই।। তাঁরা এসে পৌঁছনোর ফলে আমার কাজের অনেক সুবিধা হয়েছিল।। উদ্বোধনের আগেরদিন মাননীয় ভূমি ও ভূমি সংস্কার মন্ত্রী,  ট্রেনি অফিসারগণ এবং দপ্তরের আধিকারিকগণ এসে পৌঁছেন।। যথাসময়ে উদ্বোধন হয়।। এই ব্যাচেরই ট্রেনি অফিসার ছিলেন আজকের এল আর সি, বিবেক কুমার মহাশয়।। ১৯৯২ এর জানুয়ারি মাসে আমাদের সিনিয়র দাদা শ্রীজীব দাস (এস আর ও -২)  এখানে যোগদান করেন।।  শালবনীর Joint Survey and Settlement Training এর স্থান টি যেহেতু স্থায়ী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তাই তার নামকরন করা হয় - Analysis Research & Training Institute ।। নামকরণ করেছিলেন মুকুলকান্তি সরকার মহাশয়।। ARTI তে থাকার সুবাদে ব্যক্তিগত ভাবে পরিচিত হওয়ার সুযোগ হয়েছিল যেমন দপ্তরের প্রাজ্ঞ আধিকারিকের সাথে, তেমনই দপ্তরের বাইরের ও কিছু কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে।। হায়দ্রাবাদের National Institute of Rural Development এর Director, Dr. T. N. Haque, প্রাক্তন আই এ এস এবং সমাজকর্মী বস্তারের Dr B. D. Sharma, এই রাজ্যের শেষ ICS করুনা কেতন সেন, ফুটবলার চুনী গোস্বামী সমূহ ব্যক্তিদের সাথে।। দপ্তরের কৃষ্ণপদ সান্ডিল্য, কানাইলাল মুখোপাধ্যায়, পরিমল বন্দ্যোপাধ্যায়, ননীগোপাল সরকার, রবীন গাঙ্গুলী, সুজিত চক্রবর্তী সহ আরও অন্যান্য আধিকারিকেদের সাথে।। তাঁদের লেকচার শুনে এবং লেকচার নোট পড়ে অনেক উপকৃত হয়েছি।। সুখের কথা, আলিপুরদুয়ার থেকে যে কয়জন ক্যাজুয়াল ওয়ার্কার হিসেবে ARTIতে এসেছিল, আমার অবস্থান কালেই তারা স্থায়ী চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী হিসেবে নিয়োজিত হয়ে নিজ নিজ জেলায় ফিরে যায়।। তাদের অভাব পূরণ করতে স্থানীয় গ্রামের ১৫ জনকে daily wage এ নিয়োগ করা হয়, তারাও চাকরিতে স্থায়ী হয়েছে।। কালক্রমে ARTI এর স্থায়ী হোষ্টেল, ক্লাসরুম, লাইব্রেরি অফিস বিল্ডিং অনেক কিছুই তৈরী হয়েছে।। আমি ২০০১ সালের মে মাস পর্যন্ত ওখানেই পোষ্টিং ছিলাম।।

 

চিত্তরঞ্জন ঘোষ

বর্তমান বাসস্থান- রবীন্দ্রনগর, মেদিনীপুর শহর।।

বর্তমান মোবাইল নং - ৯৪৭৪৩০৪৫১৭, ৭০৬৩০০০৭১

কানুনগো হিসাবে যোগদান - ১৪ই সেপ্টেম্বর, ১৯৭৯।।

প্রথম কর্মক্ষেত্র -পুরুলিয়া জেলা।।

অবসর গ্রহন - ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯

 ।।

অবসরের স্থান--জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার অফিস, পশ্চিম মেদিনীপুর।।

অবসরের সময়কালীন পদ - এস আর ও -২।।

সংযোগসূত্র সার্ভে টিম

ফিল্ড ইন্সট্রাক্টরঃ বৈদ্যনাথ সেনগুপ্ত

ফিল্ডবুক রাইটারঃ সমীর ভট্টাচার্য

ফিল্ড সুপারভাইজারঃ রামচন্দ্র ঘোষ ও আশীষ সরকার

bottom of page